How wise people make the right decisions


As a busy leader or entrepreneur, you make countless decisions every day. Some of these decisions are small, like what to eat for lunch. Others are life-changing, like changing your business strategy or taking on a new opportunity.

It’s easy to get overwhelmed or overwhelmed by all of these decisions. That’s where NYU Business Professor Suzie Welch’s 10-10-10 rule comes in. It’s a simple and effective method that makes your decision-making process clearer, more focused, and more confident.

This method forces you to consider both short-term emotions and long-term values, and helps you align your decisions with your goals and priorities.

Let's see how the 10-10-10 rule works and how it is useful in evaluating short and long-term decisions-

1. Clearly define the decision: First, clearly identify the decision you need to make. For example, ask yourself ‘Should I launch a new product even though my team is already under pressure?’

2. Assess the 10-minute perspective: Ask yourself ‘How will this decision affect me right now?’ Consider your emotions, stress, and immediate consequences. For example, launching a new product can cause immediate chaos, but it can also bring excitement and momentum.

3. Consider the 10-month perspective: Then think ‘What will this decision look like 10 months from now?’ In this step, you need to assess the medium-term risks and benefits. For example, will launching a new product be a significant revenue source then, or will it still be a struggle and absorb unnecessary energy and resources?

4. Imagine the 10-Year Impact: Finally, think about the long-term impact by asking yourself, ‘How will this decision affect my life, career, or business in 10 years?’ This long-term perspective ensures that your choices align with your core values ​​and strategic vision.

For example, a successful product could propel your company to industry leadership, but if you and your team are overworked, it could have a negative impact on your employees.

Why it works

The 10-10-10 rule forces you to acknowledge both your emotional reactions and the logical consequences of a decision—those that are usually out of sight. Leaders and entrepreneurs often feel pressure to make quick decisions, and this framework helps you see beyond the immediate pressure, align decisions with your values, and consider the long-term impact.

Read More


Categories:

 Several new advisers to take oath today


The advisory council of the interim government is getting some new faces.

A government source said new advisors are likely to take oath today, Sunday.

The source could not confirm how many members are joining the advisory council.

The interim government took oath on 8 August after Sheikh Hasina fled to India on 5 August. The advisory council currently has 21 members

Read More : Click Here

Categories:

 

এই সময়ে স্ক্যাবিস


মারাত্মক ছোয়াচে রোগ স্ক্যাবিস। আর শীতের সময় এই রোগের প্রকোপ অনেক বেড়ে যায়। পরিবারের এক জনের হলে সহজেই অন্যজনের দেহে সংক্রমিত হয়। সচেতন ও সঠিক চিকিৎসা এবং পরামর্শ ছাড়া এই রোগের প্রতিকার এবং প্রতিরোধ করা অত্যন্ত কঠিন।
স্ক্যাবিস  রোগ কে বাংলায় খোস পাচড়া। সারকোপটিস স্ক্যাবিয়াই নামক জীবাণু এই রোগের কারণ। এর প্রধান লক্ষণ হলো শরীরে চুলকানি ও দানা বা বিচির মতো র‌্যাশ ওঠা। যা স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। তাছাড়া রোগীর ব্যবহৃত কাপড়-চোপড়, বিছানার চাদর, বালিশ ব্যবহার করলে এ রোগ হতে পারে।
স্ক্যাবিস একটি অনুজীব, একটি ক্ষুদ্র পোকা যা খালি ছোখে দেখা যায় না। যার আক্রমণে চুলকানি সমস্যা সৃষ্টি হয়। স্ক্যাবিস বা খোস-পাঁচড়া সারা বছর-ই প্রজনন করতে পারে, শীতল পরিবেশে তাদের প্রজনন দ্রুততর হয়। কারণ এই ধরনের আবহাওয়া তাদের বেঁচে থাকা এবং বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য অনুকূল। এছাড়া, শরীরে সংস্পর্শে আসার মাধ্যমে সহজে ছড়ায় বলে জনবহুল স্থানে প্রজননের হার বেশি হতে পারে।
ত্বকের অনান্য সমস্যা যেমন- এলার্জি, একজিমা বা ছত্রাক সংক্রমণ থেকে আলাদা। সাধারণত আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে এই মাইট (ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণু) ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। এই জীবাণু মানুষের ত্বকের ঠিক নিচের অগভীর স্তরে বাস করে এবং দিনে দুই-তিনটা ডিম পাড়ে।
কিভাবে বুঝবেন স্ক্যাবিসে আক্রান্ত
১। প্রথমেই এটি পানিযুক্ত দানা বা বিচি হয় এবং যখন এটি চুলকানো হয় তখনই এটি দ্রুত শরীরে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়।
২। রাতের বেলা বেশি চুলকানি অনূভুত হয়।
৩। পরিবারের একজন সদস্য আক্রান্ত হলে অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হয়ে থাকে।
৪। সাধারণত আঙ্গুলের ফাঁকে, ত্বকের ভাঁজে, বুকে-পিঠে,বগলে, যৌনাঙ্গে বা এর আশপাশে, নাভি ও নাভির চার দিকে ছোট ছোট দানা বা বিচি দেখা দেয় এছাড়াও সমস্ত শরীরে দেখা দিতে পারে।
৫। নবজাতক ও শিশুদের ক্ষেত্রে ঘাড়, মাথার তালু, মুখ, হাতের তালু ও পায়ের পাতার নিচেও হয়ে থাকে।
৬। অনেক সময় আক্রান্ত স্থানে ইনফেকশন যেমন পুজ, বা ব্যথাও অনুভূত হতে পারে।
৭। স্কুল, মাদ্রাসা, মেস বা অনান্য আবাসিক স্থান যেখানে একত্রে একাধিক লোকজন থাকে সেখানে এই রোগ দ্রুত ছড়ায়।
স্ক্যাবিস হলে করণীয়
১। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা।
২। পরিবারের যেকোনো সদস্য আক্রান্ত হলে পুরো সদস্য একত্রে চিকিৎসা নেওয়া।
৩। আক্রান্ত ব্যাক্তি ব্যবহৃত জামা-কাপড়, বিচানার  চাদর, বালিশের কাভার, আন্ডার গার্মেন্টসসহ সবগুলো একত্রে গরম পানিতে ভিজিয়ে,  রোদ্রে শুকানো।
৪। সম্ভব হলে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস অন্য কেউ ব্যবহার না করা।
৫। রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ব্যতীত অন্যকারও পরামর্শে কোনো ধরনের  চর্মরোগে ওষুধ বা চিকিৎসা গ্রহণ করা ঠিক না।
৬। আবাসিক হল বা মেস এ কেউ আক্রান্ত হলে অন্যত্র গিয়ে আলাদাভাবে চিকিৎসা নেওয়া।
৭। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া বা ব্যবহার করা পরিহার করা।
আমাদের মাঝে একটি ভুল ধারণা আছে যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার ফলে এই রোগের সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত এটার পক্ষে কোনো গবেষণা রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তাই বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক চিকিৎসা এবং পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসা
স্কাবিস হলে পরিবারের সকলের একসঙ্গে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। সকলের বয়স এবং ওজন অনুযায়ী আলাদা আলাদা ওষুধ সেবন করতে হয়।
১। পারমিথিন ৫% ক্রিম এবং লোশন
২। মনোসালফিরাম সলিশন (গড়হড়ংঁষভরৎধস)
৩। ইনফেকশন হলে এন্টিবায়োটিক ওষুধ।
৪। অনেক ক্ষেত্রে স্কিনে ময়েশ্চারাইজার দেওয়া হয়।
কি কি ক্ষতি হতে পারে স্ক্যাবিস হলে?
সঠিক সময়ে সঠিক রোগ (স্ক্যাবিস) নির্ণয় না হলে দীর্ঘদিন অপচিকিৎসা হলে রোগীর অনেক ধরনের শারীরিক এবং মানুষিক ক্ষতি হতে পারে। রোগ শুরুর প্রারম্ভিকে অতি অল্প এবং প্রচলিত চিকিৎসায় স্ক্যাবিস ভালো হয় অন্যথায় চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। কোন কোন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধের প্রয়োজন হয়।
স্ক্যাবিস থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন, অপরকেও সুরক্ষিত করুন। আক্রান্ত ব্যক্তির সঠিকভাবে চিকিৎসা এ সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য আপনার নিকটতস্থ চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ত্বক-চর্ম-যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট  বিভাগ, সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর।

Read More

Categories:

 সরকারি কর্মচারীদের জন্য সংশোধিত বাজেটে মহার্ঘ ভাতায় বরাদ্দ রাখার চিন্তা


সংশোধিত বাজেটে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা খাতে বরাদ্দ রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আজ সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এ ইঙ্গিত দেন।

চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট সম্পর্কে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাজেট-ঘাটতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে উন্নয়ন বাজেট সমন্বয় করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের বহু ধরনের দাবিদাওয়া মেটাতে গিয়ে বেতন-ভাতা বাড়ানোর বিষয় আছে। মহার্ঘ ভাতার বিষয় আছে। তাই রাজস্ব খাতে ব্যয় কমিয়ে রাখা খুবই কঠিন। কাজেই সবকিছু আমাদের (উন্নয়ন বাজেট) ওপর এসে পড়ে। উন্নয়ন বাজেট কমাতে হবে।

পরিকল্পনা উপদেষ্টা আরও বলেন, উন্নয়ন বাজেটে কমালে জিডিপিতে প্রভাব পড়বে, তা নয়। এক বছর বড় বিনিয়োগ থেমে থাকলেও উৎপাদন কমে যায় না। গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থানের জন্য বেশি বিনিয়োগ দরকার নেই। তিনি জানান, এবার মার্চ মাসে নয়; বরং জানুয়ারি মাসের শেষ দিকেই তাঁরা সংশোধিত উন্নয়ন বাজেট করতে চান।

আজ পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক সভা হয়, যাতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেকের চেয়ারপারসন মুহাম্মদ ইউনূস।

মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানো যাচ্ছে না। এটি কমাতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি দিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ভর্তুকিসহ অন্য বিষয় নিয়ে ব্যস্ত আছে।

উপদেষ্টা জানান, এখন থেকে কোনো প্রকল্প গ্রহণের সময় পরিবেশবিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করতে হবে। কারণ, প্রায় সব প্রকল্পই পরিবেশের ওপর কোনো না কোনোভাবে প্রভাব ফেলে। সেচ প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে স্থানীয় কৃষকদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আগের সরকারের আমলে গ্যাস খাত অবহেলিত ছিল।

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে ডিও লেটার দিয়ে বলেছি বিভিন্ন এলাকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রস্তাব পাঠাতে। কেননা এখন স্থানীয় পর্যায়ে সংসদ সদস্য নেই। আছেন শুধু আমলারা আর উপদেষ্টারা। তাই উপদেষ্টারা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। রাস্তাঘাট কোথায় কী সংস্কার দরকার, সেসব সমাধান করা হবে।’

একনেকে ১০ প্রকল্প অনুমোদন

একনেকে আজ ১ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৩৩১ কোটি টাকা।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো চিলমারী এলাকায় (রমনা, জোড়গাছ, রাজীবপুর, রৌমারী, নয়ারহাট) নদীবন্দর নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত); আশুগঞ্জ-পলাশ সবুজ প্রকল্প; কুমিল্লা অঞ্চলে টেকসই কৃষিপ্রযুক্তি সম্প্রসারণ; অর্থনৈতিকভাবে জীবনচক্র হারানো রাবারগাছ কর্তন, পুনর্বাগান সৃজন ও রাবার প্রক্রিয়াকরণ আধুনিকায়ন; ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্রের জন্য ৬০ এমএমএসসিএফডি ক্ষমতাসম্পন্ন প্রসেস প্ল্যান্ট সংগ্রহ ও স্থাপন; রশিদপুর-১১ নম্বর কূপ (অনুসন্ধান কূপ) খনন; ২ডি সাইসমিক সার্ভে ওভার এক্সপ্লোরেশন ব্লক ৭ অ্যান্ড ৯; মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ৬০টি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন; বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেটগুলোর পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (চতুর্থ সংশোধিত) এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেটগুলোর পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প।

এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক মৌলভীবাজার (প্রথম পর্যায়) প্রকল্পটি বাতিলের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হয়েছিল। ওই প্রকল্প বাতিলের জন্য বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

See More.....

Categories:

 একজন অসহায়ত্বের সুরে বলেছেন, ‘নিচের পদের সরকারি চাকরিজীবীদের সমাজে বাঁচা বড় কষ্ট হয়ে গেছে। ঋণে জর্জরিত প্রতিটি পরিবার। বৃদ্ধ পিতা–মাতার চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্তত ছোট ও সৎ কর্মচারীদের পক্ষে কথা বলুন। গ্রেড ১-৫ বাদে নিচের কর্মচারীরা খুবই দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।’



চতুর্থজনের মন্তব্য, ‘একজন দিনমজুরের দৈনিক মজুরি ন্যূনতম ৭০০–৮০০ টাকা! যারা রিকশা–ভ্যান চালায়, তারাও দিনে কমপক্ষে ৮০০ টাকার ওপরে উপার্জন করে! সম্প্রতি পোশাকশ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে! সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে! বছরে বৃদ্ধি হবে ৯ শতাংশ।’ 

আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনি শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলেছেন ঘুষ খায়, কিন্তু অনেক স্বায়ত্তশাসিত সরকারি পদ আছে; সাধারণ কর্মচারী, তাঁদের কোনো সুযোগ নেই, অল্প বেতনে সংসার চলে না। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ১০০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০, মোট বেতন ৯ হাজার টাকা, আর কোনো ভাতা নেই, তারা ৯ হাজারে কীভাবে সংসার চালাবে?’

আমরাও মনে করি, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত। এই বঞ্চনার অবসান অবশ্যই চাই। শিক্ষায় সরকারি–বেসরকারি কিংবা এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত এই শ্রেণিভেদ থাকা উচিত নয়। 

চতুর্থজনের মন্তব্য, ‘একজন দিনমজুরের দৈনিক মজুরি ন্যূনতম ৭০০–৮০০ টাকা! যারা রিকশা–ভ্যান চালায়, তারাও দিনে কমপক্ষে ৮০০ টাকার ওপরে উপার্জন করে! সম্প্রতি পোশাকশ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়েছে! সর্বনিম্ন মজুরি ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে! বছরে বৃদ্ধি হবে ৯ শতাংশ।’ 

আরেকজন লিখেছেন, ‘আপনি শুধু সরকারি কর্মকর্তাদের কথা বলেছেন ঘুষ খায়, কিন্তু অনেক স্বায়ত্তশাসিত সরকারি পদ আছে; সাধারণ কর্মচারী, তাঁদের কোনো সুযোগ নেই, অল্প বেতনে সংসার চলে না। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ১০০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০, মোট বেতন ৯ হাজার টাকা, আর কোনো ভাতা নেই, তারা ৯ হাজারে কীভাবে সংসার চালাবে?’

আমরাও মনে করি, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীরা সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত। এই বঞ্চনার অবসান অবশ্যই চাই। শিক্ষায় সরকারি–বেসরকারি কিংবা এমপিওভুক্ত ও ননএমপিওভুক্ত এই শ্রেণিভেদ থাকা উচিত নয়। 

আর মূল্যস্ফীতি রোধে মহার্ঘ ভাতা যে সব সময় কাজে লাগে না, সে কথাও মনে রাখতে হবে। যেমন ধরুন সরকার ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দিল। আর নিত্য পণ্যের দামও ২০ শতাং বাড়ল। তাতে  প্রকৃত বেতন এক টাকাও বাড়বে না। 

আমাদের দেশে অনেক রকম বৈষম্য আছে। রাজনৈতিক বৈষম্য। সামাজিক বৈষম্য। সাংস্কৃতিক বৈষম্য। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো অর্থনৈতিক বৈষম্য। সরকার এখানে রহস্যজনক কারণে ‘হাত’ দিতে চাইছে না।

অতীতের সরকারগুলো বৈষম্যকে লালন করেছে। তারা তেলা মাথায় তেল দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একই কাজ করবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। বৈষম্যবিরোধী পথযাত্রা শুরু হোক ওপর ও নিচের পর্বতসম বৈষম্য নিরসনের মাধ্যমে। সে ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উভয় শ্রেণির ওপরের ও নিচের কর্মীদের বেতনবৈষম্য একেবারে রহিত না হলেও কমবে আশা করা যায়। 

Categories:

 

আজ বছরের দীর্ঘতম রাত, সিঙ্গেলরা কী করবেন


আজ ২১ ডিসেম্বর বছরের দীর্ঘতম রাত। উইন্টার সলিস্টিস বলে পরিচিত এই রাতটি সিঙ্গেলদের জন্য বেশিরভাগ সময় খুব বোরিং, হতাশাজনক আর ক্ষেত্রবিশেষে বেদনাদায়কও হতে পারে।

আজ ২১ ডিসেম্বর। সূর্যের কক্ষপথে ঘুরে বছরের দীর্ঘতম রাতের মুখোমুখি হয়েছি আমরা আবার। শীতের রাতগুলো এমনিতেই বেশ লম্বা। কাপলদের জন্য এ এক ব্লেসিং বলা যায়। জীবন্সঙ্গীর প্রেমময় আলিঙ্গনের উষ্ণতার পরশ পাচ্ছেন যেসব ভাগ্যবান ব্যক্তি, তাঁদের কথা তো বলাই বাহুল্য। আবার ফোনে বা অন্তর্জালে ঘন্টার পর ঘন্টা প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলে সময়টা পার করতে পারেন কাপলরা অনায়াসে। এমনকী প্রেয়সী বা প্রেমিককে নিয়ে এটা সেটা ভাবরে ভাবতে বা গান শুনতে শুনতেও সময় কাটে। কিন্তু সিঙ্গেলদের জন্য এই বছরের দীর্ঘতম রাতটি বেশিরভাগ সময় খুব বোরিং, হতাশাজনক আর ক্ষেত্রবিশেষে বেদনাদায়কও হতে পারে। চলুন তবে দেখে নিই আজকের রাতে সিঙ্গেলরা কীভাবে একটু ভালো সময় কাটাতে পারেন।

দীর্ঘতম রাতটি বেশিরভাগ সময় খুব বোরিং, হতাশাজনক আর ক্ষেত্রবিশেষে বেদনাদায়কও হতে পারে। আরো পড়ুন

১. মুভি বা সিরিজ দেখুন

পছন্দের মুভি বারবার দেখতেও ভালো লাগে। এখন তো নেটফ্লিক্সসহ বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্মে অনেক মুভি ও সিরিজ আছে। কে ড্রামাও ট্রাই করে দেখতে পারেন। আবার পুরোনো দিনের নাটক বা সিনেমা খুঁজে দেখলে ভালো লাগতে পারে।

২. মেডিটেশন বা ইয়োগা করুন

মনকে শান্ত করার সবচেয়ে ভালো উপায় এটি। হয়তো অনেক দিন ধরে ভাবছেন কিন্তু করা হচ্ছে না। আজ রাতটা বেশ লম্বা৷ আজই শুরু করে দিন মেডিটেশন আর ইয়োগা। অশান্ত মনে শান্তি পাবেন।

৩. বই পড়ুন

যে বইটা অনেকদিন আগে কিনে ফেলে রেখেছেন অথচ পড়া হচ্ছে না, আজকে সেটি হাতে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কোথা দিয়ে রাত পার হবে টেরই পাবেন না।

৪. পুরোনো ছবির অ্যালবাম বের করুন

মেমোরি লেন ধরে হেঁটে আসুন আজ রাতে। পুরোনো অ্যালবামগুলো বের করুন। একটু মুছে রাখুন। ছোটবেলার স্মৃতিচারণ করতে করতে সময় কেটে যাবে।  

৫.বন্ধুরা মিলে পার্টি করুন
চুলোয় যাক প্রেম আর বিয়ে । সিঙ্গেল থাকার মজাই আলাদা। বন্ধুদের ডেকে আনুন। সারা রাত উনো খেলে, স্ন্যাক্স চিবিয়ে আর তুমুল হইচই সহযোগে আড্ডা দিয়ে দারুণ সময় কাটান। গান আর গল্পে কেটে যাক রাতটা।

৬. অনলাইন ডেটিং সাইটে ঢুঁ মারুন

কী আছে জীবনে! অনলাইন ডেটিং সাইটে একটা প্রোফাইল খুলে ঘুরে আসুন। কে জানে কোথায় আছে আপনার জীবনসঙ্গী!


Categories:

 নগদের ৪১ পরিবেশক, ২৪ হাজার এজেন্ট ও ৬৪৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান ‘নগদ লিমিটেড’ ব্যাংকে জমা টাকার অতিরিক্ত ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি তৈরি করেছে। পাশাপাশি অনুমোদনবিহীন পরিবেশকের মাধ্যমে ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। এটাকে ডিজিটাল জালিয়াতি বলা হলেও এখনো কোনো মামলা দায়ের হয়নি। কারণ, মামলা কে করবে তা নিয়ে এক মাস ধরে ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।

এ ঘটনায় ইতিমধ্যে নগদ লিমিটেডের ৪১ পরিবেশক ও ২৪ হাজার ৯৭ এজেন্টকে বরখাস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিযুক্ত প্রশাসক। পাশাপাশি ৬৪৩ জন বিক্রয় কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া শীর্ষ পর্যায়ের ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডাক অধিদপ্তরের কাছে সুপারিশ করেছেন নগদের প্রশাসক।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নগদ লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়। ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ এই এমএফএস সেবার উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিষ্ঠানটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসা শুরু করে। এটির পরিচালনায় প্রথম থেকেই আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্ত ছিলেন। ফলে হিসাব খোলা থেকে শুরু করে সরকারি ভাতা বিতরণে একচ্ছত্র সুবিধা পায় নগদ। এই সুযোগে বড় ধরনের অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২১ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশাসক বসায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর প্রশাসক দলের পরিদর্শনে বড় ধরনের ডিজিটাল আর্থিক জালিয়াতি ধরা পড়ে। সে জন্য গত ১৮ নভেম্বর আইনি ব্যবস্থা নিতে ডাক অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেন প্রশাসক। তবে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ নিয়ে ইতিমধ্যে একাধিক সভাও হয়েছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নগদের ঘটনা সম্পর্কে অবগত। এই ঘটনায় কে মামলা করবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ডাক অধিদপ্তরের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। আইনজীবীর মতামত নেওয়া হচ্ছে। এরপরই সিদ্ধান্ত হবে।’

শাস্তি যা হলো

ডাক অধিদপ্তর ও থার্ড ওয়েভ টেকনোলজির মধ্যে ২০১৭ সালে হওয়া এক চুক্তি অনুযায়ী, ব্যাংকে যত টাকা জমা থাকবে ঠিক তার সমপরিমাণ ই-মানি ইস্যু করা যাবে। তবে প্রশাসক দল পরিদর্শনে দেখতে পায়, ব্যাংকে যে টাকা জমা আছে তার চেয়ে অতিরিক্ত ৬৪৫ কোটি টাকার ই-মানি ইস্যু করেছে নগদ।

এ ছাড়া নথিপত্র পর্যালোচনায় উঠে আসে, অনুমোদন ছাড়াই নগদে ৪১ পরিবেশকের মাধ্যমে ১ হাজার ৭১১ কোটি টাকা বের করে নেওয়া হয়েছে। মূলত ই-মানির বিপরীতে নগদ টাকা তুলে নেওয়া হয়। এসব পরিবেশকের দায়িত্ব ছিল সরকারি ভাতা বিতরণ করা। এই ডিজিটাল আর্থিক জালিয়াতির ঘটনায় ৪১ পরিবেশকের পাশাপাশি ২৪ হাজার ৯৭ এজেন্টকেও বরখাস্ত করেছেন নগদে নিযুক্ত প্রশাসক। ৩ হাজার ৮৩১টি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট বা ব্যবসায়িক হিসাব বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া নগদের ৬৪৩ জন বিক্রয় কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে যেসব গ্রাহক যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়া নগদে হিসাব খুলেছিলেন তাঁদের হিসাবগুলো এখন হালনাগাদ করা হচ্ছে। যথাযথভাবে হিসাব না খোলায় অনেকের হিসাব স্থগিত করা হয়েছে।

Also read:

নগদে ডিজিটাল জালিয়াতি, ২৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না

নগদে সংঘটিত অনিয়ম টাকার পরিমাণে দেশের সবচেয়ে বড় ‘ডিজিটাল আর্থিক জালিয়াতি’। তাই নগদে ফরেনসিক নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফরেনসিক নিরীক্ষা হলো, কোনো প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের বিস্তারিত খতিয়ে দেখা, যার মাধ্যমে জালিয়াতি, অনিয়ম ও সুবিধাভোগীদের খুঁজে বের করা সম্ভব হয়।

জানা গেছে, নগদের মালিকানায় আওয়ামী লীগের নেতারা যুক্ত থাকায় তৎকালীন সরকার বিভিন্ন ভাতা বিতরণের জন্য নগদকে বেছে নিয়েছিল। আর এ সুযোগে সরকারি ভাতার একটা অংশ নিয়েও জালিয়াতি করা হয়। বিশেষ করে হিসাবে টাকা দেওয়ার পর যেসব ভাতাভোগী তিন দিনের মধ্যে তা উত্তোলন করেননি তাঁদের টাকা তুলে নেয় নগদ।

তবে জালিয়াতির কারণে যে আর্থিক দায় তৈরি হয়েছে তা পড়ে ডাক অধিদপ্তরের ঘাড়ে। কারণ, নগদকে মোবাইলে আর্থিক সেবা প্রদানের সাময়িক অনুমতিপত্র তারাই দিয়েছে। ডাক অধিদপ্তরের পক্ষে সেবাটি পরিচালনা করে নগদ লিমিটেড, একসময় এটির নাম ছিল থার্ড ওয়েভ টেকনোলজি লিমিটেড।

বাড়ছে লেনদেন

মোবাইলে আর্থিক সেবায় বিকাশের পরই নগদের অবস্থান। দেশের দ্রুত বর্ধনশীল প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও নগদ একটি। দেখা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিযুক্ত প্রশাসক দল নগদের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটির লেনদেন বাড়ছে। যেমন, গত আগস্টে নগদের দৈনিক লেনদেন ছিল ৭৪৩ কোটি টাকা, যা বেড়ে সেপ্টেম্বরে ৮০৬ কোটি টাকা এবং অক্টোবরে ৮৭১ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। আর নভেম্বরে তো লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। চলতি মাসেও একই রকম লেনদেন হচ্ছে।

নগদের একজন শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক দায়িত্ব নেওয়ায় প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়েছে। এতে নতুন গ্রাহক ও লেনদেন উভয়ই বাড়ছে। গ্রাহক বেড়ে এখন সাড়ে ৯ কোটি ছাড়িয়েছে।


Categories:

 গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসার গুরুত্বপূর্ণ দ্বার উন্মোচিত হলো: বদিউল আলম মজুমদার


নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের দুটি ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, এই রায়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসার একটা গুরুত্বপূর্ণ দ্বার উন্মোচিত হলো।

নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করে আজ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ধারা দুটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে, যেটি হচ্ছে গণতন্ত্র। ওই দুটিসহ পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করেছেন আদালত। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস হয়। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুলে ইন্টারভেনার (আদালতকে সহায়তা করতে) হিসেবে বিএনপি, গণফোরাম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, সংস্থা, ব্যক্তিসহ বেশ কয়েকজন যুক্ত হন। শুনানিতে রিট আবেদনকারী, বিএনপি, রাষ্ট্রপক্ষ, জামায়াত, গণফোরাম, ব্যক্তি ও সংস্থার পক্ষে তাদের আইনজীবীরা বক্তব্য তুলে ধরেন।

প্রতিক্রিয়ায় বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘আমি খুব উৎফুল্ল, আনন্দিত এবং অত্যন্ত সন্তুষ্ট এই রায়ে। আমি মনে করি যে এটা একটা ঐতিহাসিক রায়। এটা একটা সেমিনাল জাজমেন্ট।’

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আজকে তিনি শুধু তাঁর জন্য নয়, পুরো দেশবাসীর জন্য আনন্দিত। এই রায়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরে আসার একটা গুরুত্বপূর্ণ দ্বার উন্মোচিত হলো। তবে এটা নির্ভর করবে ভবিষ্যতে কীভাবে আচরণ করা হয়। গণতন্ত্র ফিরে আসা, গণতান্ত্রিক উত্তরণ মানে একটা পরিবর্তন। সবাই যদি আচরণে পরিবর্তন আনে, রাজনীতিবিদেরা যদি তাঁদের আচরণে পরিবর্তন আনেন, সবাই নিজেদের করণীয় করেন, তাহলে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। আর তা না হলে ফিরবে না।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দুভাবে কর্তৃত্ববাদী সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। একটা হলো ত্রয়োদশ সংশোধনী বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে। আরেকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সংবিধানে ৭ (ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করার মাধ্যমে। সংবিধান সম্পর্কে কোনো রকম জনগণের আস্থা পরাহত করা এবং এই সংবিধান সম্পর্কে কোনো রকম সমালোচনা করা। এগুলো হলো রাষ্ট্রদ্রোহ।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, তিনিসহ বহু ব্যক্তি এ বিষয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন। আদালত তাঁকে, এ ব্যাপারে যাঁরা সোচ্চার ছিলেন, তাঁদের স্বীকৃতি দিয়েছেন। ধন্যবাদ দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, চরম প্রতিকূল অবস্থাতেও নাগরিকের পক্ষে তাঁরা লড়েছেন। তাঁরা সত্যের পক্ষে, ন্যায়ের পথে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য রিট করেছেন। আজকে তিনি পুরো দেশবাসীর জন্য আনন্দিত।

Categories:

 

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা ও সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব : একটি প্রস্তাব


বাংলাদেশ সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার চারটি মূলনীতির মধ্যে গণতন্ত্র নিয়ে নীতিগত কোনো মতপার্থক্য জাতির মধ্যে নেই। পার্থক্য যা আছে সেটি হলো তার প্রয়োগ নিয়ে। গণতন্ত্রের সঠিক অনুশীলনের প্রধান বহিঃপ্রকাশ ঘটে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। দেশে বারবার নির্বাচনের নামে প্রহসন হওয়ায় গণতন্ত্রের সৌন্দর্য ও সুফল দেশের নাগরিক সমাজ দেখতে পায়নি। ফ্যাসিবাদের পতনের পরে দেশে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে এবং এ লক্ষ্যে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। একই সাথে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কারের বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে।

রাষ্ট্র মেরামতে নানাবিধ সংস্কার জাতির একটি বড় প্রত্যাশা। তবে সংস্কারের প্রধান ক্ষেত্রটি হচ্ছে সংবিধান সংস্কার। এর মধ্যে অনেক বিষয় নিয়ে বেশ বিতর্ক বা বিভিন্ন ধরনের মতামত রয়েছে। আবার কোনো কোনো দল বলতে চায়, এ সরকারের সংবিধান সংস্কার নিয়ে কাজ করার কোনো এখতিয়ার নেই। সন্দেহ নেই, সংবিধান সংশোধন, পরিমার্জন বা পুনর্লিখন যাই হোক না কেন, তা একটি গণপরিষদ বা জাতীয় সংসদ ব্যতীত অনুমোদন করার আইনগত এখতিয়ার কারো নেই। কিন্তু বর্তমান সরকার যেহেতু জাতির প্রত্যাশার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে এবং এর ফলে বিভিন্ন কমিশন থেকে তারা যে সুপারিশমালা পাবে, সেগুলো পর্যালোচনা করে যা যা তাদের পক্ষে সম্ভব স্বল্পমেয়াদে সেগুলো তারা বাস্তবায়ন করবে এবং যেগুলো পার্লামেন্টের এখতিয়ার সেগুলো পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য অপেক্ষমাণ থাকবে; বরং বর্তমান সরকার একটি নিরপেক্ষ অবস্থান থেকে নির্বাচিত সরকারের কাজ এগিয়ে রাখল। এতে বিতর্কের কিছু নেই।

সংবিধান পরিবর্তনের মধ্যে একটি ইস্যু হচ্ছে জাতীয় সংসদের মোট সদস্য সংখ্যা নিয়ে। একটি প্রস্তাব রয়েছে যে সংখ্যাটি ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৪০০-৫০০ করা যেতে পারে। আবার কারো কারো মতে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট হলে ভালো হয়। আরেকটি প্রস্তাবনা রয়েছে পার্লামেন্টে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব চালু করা। এ দুটো বিষয় নিয়ে কিছু আলোচনা করা যেতে পারে।

প্রথমে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে পার্লামেন্টে গঠন প্রসঙ্গে সুবিধা কী কী সেটি দেখা যাক। প্রথমত, এ পদ্ধতিতে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে তাদের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করে। ভোটে কোনো প্রার্থীর ছবি বা নাম থাকে না; শুধু দলের প্রতীক থাকে। ভোটাররা তাদের পছন্দের দলের প্রতীকে ভোট দেয়। নির্বাচনী ফলাফলে যে দল শতকরা যত ভাগ ভোট পায় তার ভিত্তিতে তাদের তালিকা থেকে তত জনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এর সুবিধার দিকগুলো হচ্ছে প্রথমত, বড় দলগুলোর পাশাপাশি ছোট দলগুলোও পার্লামেন্টে কমবেশি আসন পেয়ে যায়। কমপক্ষে যে দল শতকরা ১ ভাগ ভোট পায় সে দলটি অন্তত একটি আসন পাবে। স্বাভাবিকভাবে দলগুলো তাদের মধ্যকার অধিকতর যোগ্য প্রার্থী বা নেতাদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে বিধায় সংসদে যোগ্যতর সদস্যরা নির্বাচিত হতে পারে। এতে করে পার্লামেন্টের মান বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

দ্বিতীয়ত, এতে প্রতিটি ভোটেরই মূল্য পাওয়া যায়। বিজয়ী ও পরাজিত সব দলের প্রতিনিধিই সংসদে স্থান পায় বলে প্রায় সব ভোটেরই একটি মূল্য থাকে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নীতি ও আদর্শগত পার্থক্য থাকে। পার্লামেন্টে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় ছোট-বড় সব দল পার্লামেন্টে কথা বলার সুযোগ পায় এবং এতে নাগরিকরা তাদের মূল্যায়ন করতে পারে। এ পদ্ধতিতে কোনো দলের পক্ষে একক বা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। ফলে কোয়ালিশন সরকার গঠনের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়। কোয়ালিশন সরকারের বড় অসুবিধা হলো স্থিতিশীলতার সঙ্কট। শরিক দলগুলো সমর্থন প্রত্যাহার করলে যেকোনো সময় সরকারের পতন ঘটে। সাম্প্রতিককালে নেপালে এরূপ সঙ্কটের অভিজ্ঞতা দেখা গেছে। সুতরাং এ ধরনের সরকারের সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ই রয়েছে।

অপরদিকে, পার্লামেন্টে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের বড় ভয় হচ্ছে, এতে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সুবিধা নিয়ে কোনো একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী বা উগ্র দল পার্লামেন্ট উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক আসন পেয়ে যেতে পারে যা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিতে পারে এবং গণতন্ত্রকেই হুমকির মধ্যে ফেলতে পারে। যেমন সকল স্বৈরাচারের পক্ষে ১০ বা ২০ শতাংশ ভোট থাকতেই পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিবাদী দল হওয়া সত্ত্বেও তার একটি বড় সমর্থকগোষ্ঠী রয়েছে। এ জন্যই রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য পার্লামেন্টে সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতির ঘোর বিরোধিতা করছেন। সন্দেহ নেই, তার বক্তব্যের সারবত্তা রয়েছে যা উড়িয়ে দেয়া যায় না।

আরেকটি দিক পর্যালোচনা করা যেতে পারে, সেটি সংরক্ষিত মহিলা আসন। তাদের আসনসংখ্যা বেড়ে এখন ৫০টি। এতে মহিলারা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত না হয়ে পার্লামেন্ট যে দল যত ভাগ আসন পায় সে দল তত ভাগ মহিলা আসনের হিস্যা পায়। এটিও এক ধরনের সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব। এটি যদি দলের আসনের অনুপাতে না হয়ে প্রাপ্ত ভোট সংখ্যার আনুপাতিক হার হতো তাহলে সেটি বেশি ন্যায্য হতো। যেমন ধরি, কোনো দল ভোট পেল মোট ভোটের ৫ শতাংশ কিন্তু আসন পেল না একটিও। তারা ৫ শতাংশ ভোট পাওয়া সত্ত্বেও পার্লামেন্টে কোনো আসনই পেল না; মহিলা আসনও নয়। কিন্তু মোট প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে মহিলা আসন দেয়া হলে ওই দলটি একটি হলেও আসন পেতে পারে।

এবারে আলোচনা করা যাক দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট নিয়ে। এতে বড় সুবিধা হলো আইনসভায় একটি ভারসাম্য বজায় থাকে। এক কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট যদি একটি দলের একক বা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকে, তখন তারা একরোখা আচরণ করতে পারে। জনগণের স্বার্থবিরোধী আইন বা সিদ্ধান্ত তারা গ্রহণ করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ পার্লামেন্ট দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী এনে জনস্বার্থবিরোধী বহু পদক্ষেপ নিয়েছিল এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আবার ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী এনে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে। উভয় ক্ষেত্রেই তারা জনগণের কোনো ম্যান্ডেট ছাড়া এসব করেছিল। যদি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট থাকত তাহলে উচ্চকক্ষ হয়তো জনস্বার্থবিরোধী বিল পাস করতে দিত না। বাংলাদেশে যেহেতু কয়েকটি তিক্ত ঘটনা রয়েছে, সেহেতু এখানে ভারসাম্য বিধানের জন্য দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট চালু করাই অধিকতর যুক্তিসঙ্গত। আবার এর বিপক্ষেও যুক্তি রয়েছে। যেমন এতে প্রায় একই ধরনের কাজে আইন প্রণয়নে অহেতুক সময়ক্ষেপণ হবে এবং দুই কক্ষ কোনো আইনের বিষয় দুই বিপরীত মেরুতে অবস্থান করলে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দুই কক্ষের সংরক্ষণ ও পরিচালনায় প্রচুর ব্যয় বেড়ে যাবে। যাই হোক, সব ব্যবস্থাতেই কিছু সুবিধা কিছু অসুবিধা থাকে; নিজেদের মধ্যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি উন্নত হলে সমস্যা ক্রমান্বয়ে কমে যাবে বলে আশা করা যায়। ব্রিটেনে তো শত শত বছর ধরে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট চলে আসছে।

এখন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ও সমানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব প্রসঙ্গে একটি নতুন প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট সবার বিবেচনার জন্য পেশ করছি।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা চালু করা উচিত। সাধারণ কক্ষে ৩০০ আসন সরাসরি ভোটে এবং ৪০টি মহিলা আসন বিভিন্ন দলের প্রাপ্ত ভোটের সমানুপাতিক ভিত্তিতে বণ্টন করা যেতে পারে।

উচ্চকক্ষ হবে ৬০ আসনবিশিষ্ট; এর মধ্যে ৫০ জন সাধারণ আসন ও ১০টি মহিলা আসন। বিভিন্ন দলের প্রাপ্ত ভোটের সমানুপাতিক হারে তাদের প্রার্থীরা সদস্য নির্বাচিত বলে গণ্য হবেন। দলগুলো নির্বাচনের আগেই তাদের ৬০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবে। আশা করা যায়, সব দলই তাদের নেতা ও অধিকতর যোগ্য ব্যক্তিদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে। ফলে উচ্চকক্ষ হবে সব দলের প্রতিনিধিত্বশীল ও উচ্চ মানসম্পন্ন।

এই প্রস্তাব অনুযায়ী সংসদীয় ব্যবস্থা চালু হলে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে বলে আশা করা যায়। কারণ সব প্রধান দলই পার্লামেন্টে কথা বলার সুযোগ পাবে। বর্তমান সরকার গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিটি এবং রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তাবটি বিবেচনা করে দেখতে পারে।

লেখক : সাবেক সচিব ও গবেষক

Categories:

 

ব্যাংকে এক বছরের কম মেয়াদি আমানতেই এখন সুদ বেশি


সরকারি, বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকে স্বল্পমেয়াদি আমানত রাখলে সুদ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি আমানতেই বরং সুদ কম। আবার ব্যাংকের ধরনভেদে সুদের হারে তারতম্য রয়েছে। রাষ্ট্রমালিকানাধীন অর্থাৎ সরকারি ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক, বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংক ও বেসরকারি ব্যাংক—এই চার ধরনের ব্যাংকের মধ্যে এখন স্বল্পমেয়াদি আমানতে সবচেয়ে বেশি সুদ বেসরকারি ব্যাংকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সেপ্টেম্বরভিত্তিক সুদহারসংক্রান্ত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেসরকারি ব্যাংকে এক বছরের কম মেয়াদি স্থায়ী আমানতের (এফডিআর) ক্ষেত্রে গড় সুদহার ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আর এক বছরের বেশি মেয়াদি স্থায়ী আমানত ও ডিপোজিট পেনশন স্কিম বা ডিপিএসের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ৯ দশমিক ২৪ শতাংশ। সরকারি ব্যাংকে এক বছর মেয়াদি স্থায়ী আমানতের গড় সুদহার ৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। আর এক বছরের বেশি মেয়াদের স্থায়ী আমানত ও ডিপিএসের ক্ষেত্রে এই গড় সুদহার ৮ দশমিক ২২ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকের ক্ষেত্রে এক বছরের কম মেয়াদি স্থায়ী আমানতের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। এক বছরের বেশি মেয়াদের স্থায়ী আমানত ও ডিপিএসের ক্ষেত্রে এই সুদহার ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকের ক্ষেত্রে এক বছরের কম মেয়াদি স্থায়ী আমানতের গড় সুদহার ৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এক বছরের বেশি মেয়াদের স্থায়ী আমানত ও ডিপিএসের ক্ষেত্রে এই সুদহার ৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে সব ধরনের ব্যাংকে স্বল্পমেয়াদি আমানতের গড় সুদহার বেড়েছে। আগস্টে সরকারি ব্যাংকে স্বল্পমেয়াদি আমানতের গড় সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। আর এক বছরের বেশি সময়ের এফডিআর ও ডিপিএসের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ। বিশেষায়িত ব্যাংকে আগস্টে স্বল্পমেয়াদি আমানতের গড় সুদ ছিল ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর এক বছরের বেশি মেয়াদি আমানতে এই সুদহার ছিল ৭ দশমিক ২১ শতাংশ। বিদেশি ব্যাংকের ক্ষেত্রে আগস্টে স্বল্পমেয়াদি আমানতের গড় সুদ ছিল ৬ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আর এক বছরের বেশি মেয়াদের আমানতে এই সুদহার ছিল সোয়া ৫ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকে আগস্টে এক বছরের কম মেয়াদি আমানতের গড় সুদ ছিল ৯ দশমিক ২৮ শতাংশ আর এক বছরের বেশি মেয়াদি আমানতের গড় সুদ ছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন সরকারি, বেসরকারি, বিদেশি ও বিশেষায়িত মোট ৬১টি ব্যাংকের সেপ্টেম্বরভিত্তিক সুদহারের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকের সংখ্যা ৪৩, বিদেশি ব্যাংক ৯টি, সরকারি ব্যাংক ৬টি ও বিশেষায়িত ব্যাংক রয়েছে ৩টি।

ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদসংক্রান্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, যেসব ব্যাংকের তারল্যসংকট বেশি, সেসব ব্যাংক আমানতে বেশি সুদ দিচ্ছে। অর্থাৎ তারল্যসংকটে ভুগতে থাকা ব্যাংকগুলোই মূলত বেশি সুদে আমানতকারীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করছে। ফলে যাঁরা ব্যাংকে টাকা জমা রাখেন, তাঁদের সুদ আয়ের পাশাপাশি আমানতের নিরাপত্তা বা সময়মতো টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়টিকেও বিবেচনায় নিতে হবে বলে জানান খাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাঁদের মতে, দুর্বল ব্যাংকে বেশি সুদে আমানত রাখার চেয়ে কিছুটা কম সুদে ভালো ব্যাংকে আমানত রাখা আমানতকারীদের জন্য বেশি সুবিধাজনক।

ব্যাংকাররা বলছেন, বেশ কিছু ব্যাংক তারল্যসংকটে ভুগতে থাকায় দৈনন্দিন চাহিদা মেটাতে তাদের স্বল্পমেয়াদি আমানতের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এ কারণে দীর্ঘমেয়াদি আমানতের চেয়ে স্বল্পমেয়াদি আমানতে বেশি সুদ দেওয়া হচ্ছে।

রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি বা এক বছরের কম সময়ের স্থায়ী আমানতে সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে বেসিক ব্যাংক। বিগত আওয়ামী সরকারের মেয়াদে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুর ব্যাপক ঋণ অনিয়মের কারণে ব্যাংকটি এক দশকের বেশি সময় ধরে ধুঁকছে। এ অবস্থায় নিজেদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বেশি সুদে স্বল্পমেয়াদি আমানত সংগ্রহ করছে ব্যাংকটি। 

বিশেষায়িত ব্যাংকের মধ্যে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি আমানতে সবচেয়ে বেশি সুদ রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে। ব্যাংকটি এক বছরের কম সময়ের আমানতে সুদ দিচ্ছে ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর এক বছরের বেশি মেয়াদি আমানতে এই সুদ ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশি মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে স্বল্পমেয়াদি আমানতে সবচেয়ে বেশি সুদ হাবিব ব্যাংক। ব্যাংকটি এক বছরের কম সময়ের স্থায়ী আমানতে ১১ দশমিক ০৭ শতাংশ সুদ দিচ্ছে। আর এক বছরের বেশি সময়ের আমানতে সুদ দিচ্ছে ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। 

বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে স্বল্পমেয়াদি আমানতে সবচেয়ে বেশি সুদ দিচ্ছে এবি ব্যাংক। ব্যাংকটি ১১ দশমিক ৩৭ শতাংশ সুদে এক বছরের কম মেয়াদি আমানত সংগ্রহ করছে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে এক বছরের বেশি সময়ের অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি আমানতে বেশি সুদ দিচ্ছে এনআরবি ব্যাংক। ব্যাংকটি ১১ দশমিক ০৩ শতাংশ সুদে এক বছরের বেশি মেয়াদি এফডিআর ও ডিপিএস সংগ্রহ করছে আমানতকারীদের কাছ থেকে

Categories:

 পৃথিবীর প্রথম কার্বন নিরপেক্ষ শিশু



Categories:

 

জিকা ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়, লক্ষণ ও প্রতিকার কী

জিকা ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় উগান্ডায় ১৯৪৭ সালে। ভাইরাসটি পাওয়া গিয়েছিল রেসাস ম্যাকাও বানরের শরীরে। পরবর্তী সময়ে পঞ্চাশের দশকে আফ্রিকান দেশগুলোয় মানুষের শরীরেও এই জীবাণু পাওয়া যায়। ভয়াবহ ব্যাপার হলো, ১৯৬০-১৯৮০ সালের মধ্যে আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে এটি ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম ধরা পড়ে ২০১৪ সালে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশে পাঁচজন জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়, যদিও বিষয়টি সাধারণের অজানা ছিল। গত তিন মাসে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত আটজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। জিকার দুটি ধরন—এশিয়ান ও আফ্রিকান। বাংলাদেশে পাওয়া রোগের ধরন এশিয়ান, যা প্রায় ৯ বছর পর পাওয়া গেল।
জিকা ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়

জিকা ভাইরাস ছড়ায় এডিস মশকীর মাধ্যমে। এই মশা দিনে বেশি কামড়ায়। আর এই মশা দিয়েই ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও পীতজ্বরও ছড়ায়। রক্ত পরিসঞ্চালন এবং অনিরাপদ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়ায়। গর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসের মধ্যে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তা গর্ভের শিশুতেও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভস্থ শিশুর জন্য বিষয়টি মারাত্মক জটিলতার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

রোগের লক্ষণ কী কী
জিকা ভাইরাস সংক্রমণে সাধারণত কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। তবে ৩–১৪ দিনের মধ্যে শরীরে লালচে দানার মতো ছোপ বা র‍্যাশ, হালকা জ্বর, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, চোখ থেকে পানি পড়া, মাংসপেশি এবং গিঁটে গিঁটে ব্যথা, অবসাদ এবং মাথাব্যথা হতে পারে। এসব লক্ষণ সর্বোচ্চ ২-৭ দিন থাকতে পারে।
রোগের জটিলতা
গর্ভাবস্থায় জিকা ভাইরাস আক্রমণ হলে শিশুর মাইক্রোকেফালি (স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট মাথা), চোখের সমস্যা, শ্রবণজনিত সমস্যা হতে পারে। এমনকি অপরিপূর্ণ শিশুর জন্ম (প্রিটার্ম বেবি) এবং গর্ভস্থ শিশুর জীবনাবসান পর্যন্ত হতে পারে। জিকা ভাইরাস সংক্রমণে শিশু ও বড়দের আরও কিছু রোগের ঝুঁকি থাকে, যেমন গুলেন বারি সিনড্রোম। এ ছাড়া অন্যান্য স্নায়বিক রোগের আশঙ্কাও সৃষ্টি হয়।

রোগনির্ণয়
জিকায় আক্রান্ত কোনো দেশ থেকে কেউ আসার পর ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে জীবাণু শনাক্ত করা যায়। এ ছাড়া এক মাসের মধ্যে রোগীর প্রস্রাব এবং পুরুষ রোগীর ক্ষেত্রে দুই মাসের মধ্যে বীর্য পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা যায়। বাংলাদেশ সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) এসব পরীক্ষা করা যায়।
১. জিকা ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক তৈরি হয়নি, তাই নিজেদের সচেতনতাই জরুরি।

২. রাতে তো অবশ্যই, দিনেও মশারি ব্যবহারের অভ্যাস করতে হবে, প্রয়োজনে জানালায় মশানিরোধী জাল ব্যবহার করা যেতে পারে। অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশুদের ক্ষেত্রে এটা বেশি প্রয়োজন।

৩. জিকায় আক্রান্ত হলে বিশ্রাম এবং বেশি বেশি তরল খাবার খেতে হবে। গিঁটে বা শরীরে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে। নিজে থেকেই ব্যথার ওষুধ খেয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না।

জিকায় মৃত্যুর খবর খুব একটা পাওয়া না গেলেও ওপরে বর্ণিত মারাত্মক সমস্যাগুলো থেকে নিরাপদ থাকার জন্য সাবধান থাকা জরুরি।


Categories: